ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি পুরোপুরি বন্ধের সুপারিশ করেছে বৈষম্যহীন টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ–সংক্রান্ত টাস্কফোর্স। এই টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি পুরোপুরি বন্ধ করা উচিত। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ব্যাপক পরিসরে ছাত্ররাজনীতি দেখা যায়, যা একাডেমিক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ।
গত ১১ সেপ্টেম্বর বৈষম্যহীন টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ টাস্কফোর্স গঠন করেছে সরকার। গত বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ থাকে, যা একাডেমিক স্বাধীনতাকে টেনে ধরে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক কে এ এস মুরশিদের নেতৃত্বে এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়।
এই টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে অর্থনীতি, ব্যাংক, অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্লেষণ করে সুপারিশ করা হয়। শিক্ষা খাত নিয়ে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কিছু করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা কমানোর সুপারিশ
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা কমানোর সুপারিশ করেছে ওই টাস্কফোর্স। টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় একীভূত করার বিষয়টি সরকার বিবেচনা করতে পারে। এই সুপারিশ করার কারণ হিসেবে টাস্কফোর্স বলেছে, শিক্ষা তহবিলের সীমাবদ্ধতার বিষয়টি যৌক্তিক করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে পারস্পরিক মেধাসম্পদ ব্যবহার করা যাবে, যা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বৈশ্বিক র্যাঙ্কিংয়ের উন্নতিতে সহায়তা করবে।
প্রতিবেদনের বক্তব্য অনুসারে, হাতে গোনা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানসম্পন্ন শিক্ষা দিতে পারছে না। বাজারের চাহিদামতো দক্ষ সম্পদ গড়ে তোলা যাচ্ছে না। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশের অনেক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ন্যূনতম মানের শিক্ষাও দিতে পারছে না। অথচ এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি কম। এর মানে, দেশের করদাতাদের পয়সার যথার্থ ব্যবহার হচ্ছে না।
অন্যদিকে মানসম্পন্ন শিক্ষা দেওয়ার নামে বেসরকারি মালিকানাধীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ‘সাটিফিকেট’ বিক্রির প্রবণতা আছে বলে উল্লেখ করা হয় ওই প্রতিবেদনে। এ ছাড়া ঢাকার বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সম্পদের সীমাবদ্ধতার কথাও বলা হয়েছে।